বাংলার রাজনীতি ও আমার জীবনের
কিছু কথা ঃ
========================================================================
মালদহ জেলার রতুয়ার জাননগর গ্রামে আমার জন্ম । আমার বাবা সম্পন্ন মৈথিল ব্রাম্ভন পরিবার । যাদের জাননগর ও ভালুয়ারা মৌজায় প্রচুর জমি জমা ছিল । ১৯৬৬ সালে ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কমিউনিস্ট পার্টি { মার্ক্সবাদী } প্রতি আকৃষ্ট হলাম । নিজে কে সাচ্চা কমিউনিস্ট হিসাবে নিজেকে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতে থাকি । বিভিন্ন ছাত্র, যুব , শ্রমিক আন্দোলনের কর্মী হিসাবে বিভিন্ন সময় কাজ করেছি আর আমার প্রেরনার উৎস জেলার তৎকালীন কমিউনিস্ট নেতা মানিক ঝা ।
১৯৭২ সালে আধা ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাস দিন গুলি আমি দুর্গাপুরে চলে আসি । দেশের বাড়ি তে পরে রইল
আমার মা আর জন্মভুমি । ঠিকা শ্রমিক , যুব , আর শ্রমিক আন্দোলনের মধ্য দেশে সমাজ তন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে বিভোর দেশের জমি জায়গায় নজর না দেবার ফলে আমার মায়ের অশিক্ষা ও চক্রান্ত করে তার কাছ থেকে সমস্ত জমি লিখিয়ে নেয় । আর বাকি আমার অংশ জোর করে দখল করে নিয়েছ । অন্য দিকে পার্টিতে একটা বড় অংশ আস্তে আস্তে দুর্নীতি তে জড়িয়ে পড়ছে , প্রতিবাদ করলে খারাপ হয়ে যাচ্ছি । কিন্তু আমি জানি এক কমিউনিস্ট কে চারটি সংগ্রাম চালাতে হয় ।
১ নিজের সঙ্গে সংগ্রাম
২ পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম
৩ দলের মধ্যে সংগ্রাম
৪ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম
এই সংগ্রাম একজন কমিউনিস্ট কে সাচ্চা করে তুলতে পারে । কমিউনিস্ট বিপ্লব পরিচালনা করতে চাই সুশৃঙ্খল কর্মী বাহিনী , চাই স্বার্থ ত্যাগী কর্মী , এই কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে । বরং সংসদীয় পথের চোরা গলিতে পথ হারিয়ে ফেলেছে এদেশের কমিউনিস্টরা । এখান থেকে বেড়িয়ে আসা তাদের পক্ষে অসম্ভব নয় । পূর্ব ইউরোপ বা রাশিয়ার পতনের পর ভাবতে শুরু করলাম আর বিভিন্ন মতাদর্শ গত আলোচনা মধ্য দিয়ে বুঝে নেবার চেষ্টা করেছি । আমার শেষ সিদ্ধান্ত জাতীয়তাবাদ ছাড়া রাষ্ট্রের কল্যাণ হতে পারে না । তাই কমিউনিস্ট আন্দোলন থেকে ১৯৯২ সাল ৬ই ডিসেম্বর একাত্বমানবতা বাদের পক্ষে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিলাম । সিঙ্গুর আর নন্দী গ্রাম আন্দোলন আর রাজ্যে বুদ্ধদেবের স্বৈরাচারী শাসনের অবসানের প্রয়োজনে মা মাটি মানুষের আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলাম । ২০১১তে মমতা ব্যানারজি নেতৃত্বে ৩৪ বছরের জগদ্দল পাথর সরিয়ে রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় মা মাটি মানুষের সরকার ।
৫ বছর পর ২০১৬ সালে বাংলার মানুষ রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরিয়ে এনেছেন । সি পি এম আজ মতাদর্শ ত্যাগ করে রাহুল গান্ধির সাথে পুস্প বন্ধনে আবদ্ধ ।
অন্য দিকে আমার জীবনে রইল ১৯৬৬ থেকে ২০১৬ অনেক আনন্দ দুঃখ বেদনার কাহিনী । তা একে লিখে রেখে যেতে চাই ।
এর মধ্যে সব চেয়ে বড় আঘাত আসে অনিল ঘোষের কাছ থেকে যে আমার বাস্তু ভিটা টি দখল করে বসে আছে গায়ের জোরে । যে গ্রামে জন্মেছি সেখানের এক প্রতিবেশির কাছ থেকে এরকম ব্যবহার পাব আশা করিনি ।